শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ০২:৫৩ পূর্বাহ্ন
গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী শ. ম রেজাউল করিম বলেছেন, বঙ্গবন্ধুর জন্ম না হলে আমরা স্বাধীন বাংলাদেশ পেতাম না। কিন্তু ৭১ এর পরে পরাজিত শক্তি দেশের স্বাধীনতাকে মেনে নিতে পারেনি।
তিনি বলেন, স্বাধীনতা যুদ্ধে ভারতসহ বিশ্বের অনেকে সহায়তা করলেও কিছু দেশ স্বাধীনতার পরেও আমাদের মেনে নিতে পারেনি। পরাজিত শক্তি কর্তৃক বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর তারা এদেশের স্বাধীনতাকে স্বীকার করেছিল।
রোববার (৮ ডিসেম্বর) সকালে পিরোজপুর মুক্তদিবস উপলক্ষে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ সব কথা বলেন।
এ সময় মন্ত্রী স্বাধীনতা যুদ্ধে পাকিস্তানি সেনাদের হাতে নিহত পিরোজপুরের ভাগিরথীসহ সব শহীদদের রুহের মাগফিরাত কামনা করেন।
পিরোজপুরে নানা আয়োজনের মধ্যদিয়ে রোববার (৮ ডিসেম্বর) মুক্ত দিবস পালন করা হয়েছে। এ উপলক্ষে সকাল সাড়ে ৯টায় শহরের শহীদ ভাগীরথী চত্বরে শহীদ স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পমাল্য অর্পণ করা হয়। আনন্দ শোভাযাত্রা শেষে শহরের স্বাধীনতা চত্বরে স্বাধীনতা মঞ্চের উদ্বোধন, গণ-সংগীত পরিবেশন ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
এ উপলক্ষে সকাল ১০টায় শহরের টাউন ক্লাবের স্বাধীনতা মঞ্চে জেলা প্রশাসক আবু আলী মো. সাজ্জাদ হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন পিরোজপুরের নারী সংসদ সদস্য (এমপি) শেখ এ্যানী রহমান, পিরোজপুর পৌর মেয়র হাবিবুর রহমান মালেক, জেলা আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট হাকিম হাওলাদার, সহকারী পুলিশ সুপার মোল্লা মো. আজাদ, সাবেক জেলা ও দায়রা জজ ও মুক্তিযোদ্ধা মো. সালাম শিকদার, মুক্তিযোদ্ধা গৌতম নারায়ন চৌধুরী, জেলা যুবলীগ সাধারণ সম্পাদক মো. জিয়াউল হাসান গাজী প্রমুখ।
এর আগে মন্ত্রী টাউন ক্লাব মাঠে স্বাধীনতার মঞ্চের উদ্বোধন করেন।
দীর্ঘ নয় মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ শেষে এ দিনে পিরোজপুর পাকিস্তানি হানাদার মুক্ত হয়। ঘরে ঘরে উড়েছিল লাল সবুজের বিজয় পতাকা। পিরোজপুরের ইতিহাসে এ দিনটি বিশেষ স্মরণীয় দিন। মুক্তিযুদ্ধের নবম সেক্টরের অধীন পিরোজপুর ছিল সুন্দরবন সাব-সেক্টর কমান্ডার মেজর জিয়াউদ্দিনের দায়িত্বে।
১৯৭১ সালের ৪ মে পিরোজপুরে প্রথম পাকিস্তানি বাহিনী প্রবেশ করে। শহরের প্রবেশদ্বার হুলারহাট নৌ-বন্দর থেকে হানাদার বাহিনী শহরে প্রবেশের পথে প্রথমেই তারা মাছিমপুর ও কৃষ্ণনগর গ্রামে শুরু করে হত্যাযজ্ঞ। তারপর ৮ মাস স্থানীয় শান্তিকমিটির নেতা ও রাজাকারদের সহায়তায় বিভিন্ন এলাকায় সংখ্যালঘু ও স্বাধীনতা পক্ষের লোকজনদের বাড়ি-ঘরে আগুন দেওয়া হয়। হত্যা করা হয় প্রায় ৩৫ হাজার মুক্তিকামী মানুষকে । সম্ভ্রম হারান প্রায় ৫ হাজার মা-বোন।
পিরোজপুরকে হানাদার মুক্ত করতে সাব-সেক্টর কমান্ডার মেজর জিয়াউদ্দিনের নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধাদের একটি দল সুন্দরবন থেকে ৭ ডিসেম্বর রাত ১০টায় পিরোজপুরের দক্ষিণপ্রান্ত পাড়েরহাট বন্দর দিয়ে শহরে প্রবেশ করে। মুক্তিবাহিনীর এ আগমনের খবর পেয়ে পাকিস্তানি হায়নারা শহরের পূর্বদিকের কচানদী দিয়ে লঞ্চ-স্টিমারে করে বরিশালের উদ্দেশ্যে পালিয়ে যায়। অবশেষে দীর্ঘ আট মাস অবরুদ্ধ থাকর পর ৮ ডিসেম্বর পিরোজপুর হানাদার মুক্ত হয়।